ঈশ্বরদী প্রতিনিধিঃ পরিবেশ দূষণের দায়ে কল-কারখানাকে জরিমানা কিংবা নদ-নদী ও জলাশয় দূষণ বা দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা চোখে পড়ার মতো হলেও পলিথিনের ব্যবহার রোধে আইনের প্রয়োগ তেমন নেই।
এ কারণে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যদিও এ অপরাধ বন্ধে সচেতনতারই বেশি দরকার, তবুও আইনের প্রয়োগও বাড়াতে হবে। না হলে এর উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ হবে না।
‘পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর সামগ্রী উত্পাদন, বিক্রয় ইত্যাদির উপর বাধা-নিষেধ’ শীর্ষক আইনের ৬(ক) ধারায় বলা হয়, ‘সরকার মহাপরিচালকের পরামর্শ বা অন্য কোনোভাবে যদি সন্তুষ্ট হয় যে, সকল বা যেকোনো ধরনের পলিথিন শপিং ব্যাগ বা পলিইথাইলিন বা পলিপ্রপাইলিনের তৈরি অন্য কোনো সামগ্রী বা অন্য যেকোনো সামগ্রী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে সারা দেশে বা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় এ ধরনের সামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি, বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার বা প্রজ্ঞাপনে নির্ধারিত শর্তাধীনে ওই সকল কার্যক্রম পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশ জারি করতে পারবে। এবং ওই নির্দেশ পালনে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি বাধ্য থাকবেন।
‘পলিথিন শপিং ব্যাগ’ বলতে বোঝানো হয়েছে পলিইথাইলিন, পলিপ্রপাইলিন বা এর কোনো যৌগ বা মিশ্রণের তৈরি কোনো ব্যাগ, ঠোঙ্গা বা অন্য কোনো ধারক যা কোনো সামগ্রী কেনা-বেচা বা কোনো কিছু রাখা বা বহনের কাজে ব্যবহার হবেনা ।
পরিবেশবাদী একাধিক মানুষের সাথে কথা বললে তারা বলেন দেদারসে পলিথিনের ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজার থেকে কিনলেই পলিথিন দেওয়া হচ্ছে। যেমন- মাছ, গুড় বা এ জাতীয় পণ্য বহনে পলিথিন ছাড়া উপায় নাই। কিন্তু আইন যেহেতু আছে, সেহেতু এর ব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আইন মানতে হবে, আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে’।
তারা আরো বলেন,‘পরিবেশের অন্য সেক্টরগুলোর মতো এখানেও আইনের প্রয়োগ বাড়াতে হবে। যেন কেউ পলিথিন উৎপাদন করতে না পারেন’।
ঈশ্বরদীতে ‘খুব সহজেই পলিথিন মুক্ত করা যেতো। কারণ, মানুষও চান, পলিথিন মুক্ত হোক। আইনও আছে। কিন্তু সরকার ও প্রশাসন কেন এ আইন প্রয়োগ করছে না- সেটি বোধগম্য নয়। পলিথিনের বিপরীতে দেশি পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা যায়।
‘শুধু প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেই পলিথিনের ব্যবহার রোধ করা সম্ভব। এজন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় বা অধিদফতরকে দোষারোপ করতেই পারি। কারণ, তারা অ্যাকশনে যাচ্ছে না’।
এদিকে আমাদের একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছেন গত (১১ আগষ্ট)/ ২০২০ ইং ঈশ্বরদীর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড শৈলপাড়া এলাকায় জনৈক শিপন নামক এক অবৈধ পলিথিন ফ্যাক্টরির মালিক কে আটক করা হয়েছিল।
অপরদিকে এই অবৈধ পলিথিন ফ্যাক্টরী শৈলপাড়া এলাকায় বসবাসকারী দের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান,এই পলিথিন ফ্যাক্টরীতৈ যে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে তা কতটুকু বৈধতা রয়েছে তা তদন্ত হওয়া দরকার বলে তারা দাবী তুলেছে। এমন কি এই অবৈধ পলিথিন ফ্যাক্টরীতে উৎপাদন মালামালের সরকারী কাষ্টম ভ্যাট দেয়া হয় কিনা তা খতিয়ে দেখার দরকার বলে অনেকেই জানান।
তাছাড়া অবৈধ পলিথিন কারখানাটির পরিবেশ ছাড়পত্র আছে কিনা তাও দুরুত্ব খতিয়ে দেখা দরকার। এ বিষয়ে পরিবেশ বিষয়ক কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ঐ এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ মানুষ। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ দুষনের ফলে মানুষের নানা বিদ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে ভূক্তভোগিরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অবৈধ পলিথিন কারখানার মালিক শিপনের সাথে স্বরেজমিনে তার ফ্যাক্টরিতে দেখা হলে সে ঈশ্বরদীর সিনিয়র সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। নিউজ করলে তার কিছুই হবে না বলে দাবী করেন।
এ ব্যাপারে পাবনা জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ মহোদয়ের “ক্রাইম নিউজ ঢাকা কে বলেন তিনি এই পলিথিন ফ্যাক্টরির বিষয়ে কিছুই জানেন না।অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলার পরামর্শ দিয়ে বলেন আমার কাছে ম্যাজিষ্টেট চাইলে আমি দিবো।
ঈশ্বরদী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসির উদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান আমি জানি না , তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।