ঈশ্বরদী প্রতিনিধি: ঈশ্বরদীতে প্রস্রুতি মায়ের ওরশজাত নবজাতককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাবেক ফ্যামিলি প্ল্যানিং কর্মচারী মোছা. আকলিমা খাতুন (৫৫)র বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোছা. আকলিমা খাতুন উপজেলার মশুড়িয়া পাড়া এলাকার ডা. মো. আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী এবং লালিমের মা।
অভিযোগকারী মো. মামুন তার নবজাতক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের জানান, আমার স্ত্রী মোছা. সেলিনা খাতুন গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত আকলিমা নানা ভাবে তাকে ডাক্তারের কাছে না নিতে প্ররোচিত করে আসছিলো। আমরা তার কথা অমান্য করে আমার স্ত্রীকে প্রসূতি ডাক্তারের মাধ্যমে নিয়মিত চেকআপে রাখতাম। তারই এক পর্যায়ে ঘটনার দিন গত ১৯ ডিসেম্বর সকালে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিতে উদ্যত হলে অভিযুক্ত আকলিমা তাতে বাধ সাধেন। সে নানা ভাবে আমাদের হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেতে না দিয়ে আমার স্ত্রীর ডেলিভারী করানোর জন্য শহরের মশুড়িয়াপাড়া এলাকায় আকলিমার নিজ বসত বাড়িতে নিয়ে যান এবং আমাদের নানা ভাবে আশ্বস্থ করেন যে আমার স্ত্রী ও সন্তানের কোন প্রকার ক্ষতি হলে সে তার দায়ভার গ্রহন করবেন।
মামুন আরও বলেন, তার বাড়িতে নেয়ার পর আমার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে হাসপাতালে নিতে চাইলে বার বার আকলিমা আমাদের বাধা দেন এবং সে রাজশাহী থেকে ডেলিভারী করানোর ট্রেনিং প্রাপ্ত গাইনী বলে নিজেকে জাহির করতে থাকেন। কিন্তু দিনশেষে আমার মরা বাচ্চা এবং অসুস্থ স্ত্রীকে তিনি হাসপাতালে পাঠান। সে সময় তার কাছে আমার বাচ্চাকে হত্যা করল কেন জানতে চাইলে তিনি আমাতে সাত পাঁচ বলে তার বাড়ী থেকে বের করে দেন।
নিহত শিশুর চাচা আল আমিন বলেন, আমাদের কোন ভাবেই আকলিমা হাসপাতালে যেতে দেননি অথচ আমার ভাতিজাকে হত্যার পর তাকে এবং তার মাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর জন্য পাগল হয়ে যান খুনি আকলিমা।
তিনি আরও বলেন, ডেলিভারির সময় বাচ্চার মাথায় এমন ভাবে আঘাত করেছেন যে পরে সেই মাথাটা প্রায় বিক্রিত হয়ে গেছে। মাথা ফুলে লাল টকটকে এবং লম্বা হযে গেছে বলেও তিনি জানান।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার এক প্রতিবেশী জানান, কোন মহিলার গর্ভবতী হওয়ার কথা শুনলেই আকলিমা সেই বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে দেন। যে কোন মূল্যে তাদেরকে তার কসাই খানায় নিয়েই স্বাভাবিক ডেলিভারি করানোর হাজারো ফন্দি ফিকির জাহির শুরু করেন। যদিও কোন প্রকার সার্টিফিকেট ছাড়াই আকলিমা অত্র এলাকার মধ্যে নিজেকে দক্ষ গাইনী হিসেবে দাবি করেন। তাই কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিক নয় প্রসূতিদের তার বাড়িতে এনে ডেলিভারী করানই তার এক মাত্র পেশা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেবিকা বলেন, ঈশ্বরদীর পূর্বনূর মহল্লার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস কারী দরিদ্র মানুষ গুলোই আকলিমা বেগমের প্রধান টার্গেট। এই স্বল্প আয়ের মানুষ গুলোকে আকলিমা নানা ভাবে ফুসলিয়ে তার বাগে আনেন এবং এই ধরণের মরণ খেলায় নিজেকে রানী দাবি করে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলেন। কোন প্রকার অঘটন ঘটলেই নানা ভুলভাল বুঝিয়ে বা ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে ভুক্ত ভোগীদের চুপথাকার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে একাধিক।
জানতে চাইলে আকলিমার সাথে তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এমতাবস্থায় ভুক্তভোগীর পরিবারসহ এলাকার সাধারণ জনগণ এই হত্যার সুষ্ঠ্যু তদন্তসহ প্রশাসনের আশু দৃষ্টি এবং হস্তক্ষেপ কামনাসহ অনতিবিলম্বে আকলিমার এই অবৈধ মানুষ মারার কারখানা বন্ধের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।