উত্তরা প্রতিনিধিঃ রাজধানীর তুরাগ থানাধীন খায়ের টেকে দেখা মিলেছে দ্বিতীয় পাপিয়ার। ২০২১ এর শেষ দিকে এসে ঘাটি করে রাজধানীর তুরাগ থানাধীন খায়েরটেক মসজিদের পাশের মোঃ এনায়েত এর বহুতল ভবনের পঞ্চম তলায়। চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ ভাবে দেহ ব্যবসা।আলামত দেখে বুঝা যায় মাদকের জমজমাট আসর বসাতেন তিনি। অত্যান্ত কম বয়সী অসহায় কিশোরী মেয়েদের দিয়ে করাচ্ছেন এই ব্যবসা। ব্যবসা টি পরিচালনা করেন শরিয়তপুর থেকে আসা শিরীন।গত নভেম্বর মাস থেকে টঙ্গী এলাকায় আইনসৃংখলা বাহিনীর তৎপরতায় অবৈধ দেহ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারফলে টঙ্গী থেকে খায়ের টেক কাজী অফিস সংলগ্ন মসজিদের পাশের মোহাম্মদ এনায়েতের দশ তলা ভবনের পঞ্চম তলার বাম পাশের ফ্ল্যাটটিতে এসে শুরু করেন এই ব্যবসা। অবশ্য ক্রয় শুত্রে এই ফ্ল্যাটের মালিক হলেন নয়ানীচালার বসবাসকারী মোহাম্মদ আসাদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনজন কিশোরী মেয়ে ও তিনজন প্রাপ্ত বয়ষ্ক মহিলা এবং দু’জন খরিদদারকে পাওয়া যায়। এরই সাথে ওই ফ্ল্যাটের বিভিন্ন স্থানে খোলামেলা ভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা সেবন করার সরঞ্জামাদি।
এসম্পর্কে জানতে চাইলে অসহায় কিশোরীদের নিয়ে দেহ ব্যবসা করা শিরীন জানান, “এই ব্যবসায় কাঁচা টাকা তাই এই ব্যবসা করি। টঙ্গী থেকে আসলাম এখানে,আমার ব্যবসা চলমান থাকবে। আপনারা কি করতে পারবেন করেন আমি কোন কিছুতেই ভয় পাই না।সব কিছুই সামলানোর ক্ষমতা আছে আমার।”
এছাড়াও তিনি বার বার নিজের ফেসবুক আইডির কভার ফটোতে থাকা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর সাথে তোলা সেল্ফি দেখাচ্ছিলেন।
অনুসন্ধান করে জানা যায় দেহ ব্যবসায়ী ও মাদক ব্যবসায়ী শিরীনের নেতৃত্বে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের একটি নির্মাণাধীন ভবনসহ তুরাগে আরও দুটি দেহ ব্যবসার স্পর্ট রয়েছে এখানেও একই ভাবে মাদক সেবনসহ দেহ ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করেন শিরীন।
অতঃপর তিনি সংবাদকর্মীরা চলে আসার পর থানায় গিয়ে ঘটনার দিন উপস্থিত থাকা অসংখ্য উৎসুক জনতার মধ্যে গণ্যমান্য এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়,কোন এক প্রভাবশালীর ইন্ধনে অভিযোগটি দায়ের করেন শিরীন।অবশ্য অভিযোগের আয়ু জানান, “এই অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। সংবাদকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ করার সময় উপস্থিত থাকা উৎসুক জনতার মধ্য থেকে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সম্মানহানির উদ্দেশ্য নিয়ে এই অভিযোগ করা হয়। আমরা এই দেহব্যবসায়ীকে নিজের সম্মান বাচিয়ে এই এলাকা থেকে চলে যাওয়ার জন্য জানিয়েছি।”
সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্নভাবে সাংবাদিককে পরবর্তী নিউজ প্রকাশে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শিরীন ও তার সহযোগীরা। বিভিন্ন ভাবে সংবাদকর্মীদের আইসিটি আইনে মামলা করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন মসজিদের পাশের আবাসিক ভবনে দেহ ব্যবসা ও মাদক সেবন করার আসর বসানো শিরীন।
এ ব্যবসা পরিচালনার সহায়তায় দারোয়ানের নাম উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বসবাসকারী জানান,”দারোয়ান এর যোগসাজশ ছাড়া কোন ভাবেই এরকম কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তার সামনে দিয়ে অপরিচিত মানুষ ভবনে প্রবেশ করবে কিন্তু সে বাধা দিবে না এটাতো সহজভাবে মেনে নেওয়া যায় না। অবশ্যই এর সাথে ভবনের দারোয়ানের সম্পৃক্ততা থাকার সম্ভাবনা ব্যাপক।”
বাড়িটিতে বসবাসকারী বাড়ির মালিকের ছেলে রাজু ঘটনাস্থলে এসে জানায়, “আপনাদের কি করনিয় আছে করেন।আমি ওই ফ্ল্যাটের মালিককে বলেছি আমাদের বাড়ি থেকে ওই মহিলাকে বের করে দেওয়ার জন্য এবং দারোয়ানের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকেও বরখাস্ত করা হবে। বিগত ৩০ বছরেও কেউ এমন কথা বলতে পারবেনা আমাদের বাড়িতে কোন ছোট অপরাধ হয়েছে। আমাদের সম্মান বিনষ্টকারী এই নারীকে বাড়ি হতে বের করে দেওয়ার জন্য ফ্ল্যাটের মালিক আসদ কে জানিয়েছি।দ্রুতই তিনি এর ব্যবস্থা নিবেন। ”
এবিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এব্যাপারে উত্তরা জোনের উপ পুলিশ কমিশনারকে অবগত করলে তিনি জানান,”এসকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর।খুব দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা সমাজ বিনষ্টকারী দেহ-ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিকট কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবি জানান। (পর্ব ২) অনুসন্ধান চলমান