অনলাইন ডেক্সঃ পটুয়াখালীর গলচিপা থেকে পাঁচ জলদস্যুকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. খলিল জমাদ্দার (৫০), মো. মাহাতাব পোদা (৩৩), মো. জামাল আকন্দ (৩৬), মো. মাছুম ওরফে মানছুর খলিফা (৪৬) ও মো. মিনাজ খাঁ (২৫)।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি এক নলা বন্দুক, ওয়ান শ্যুটার গান, দেশীয় অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করা হয়।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্হ র্যাব মিডিয়া- সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
এসময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তাসহ অন্যান্য উধর্বতন কর্মকর্তারা উপস্হিত ছিলেন।
তিনি বলেন, পাথরঘাটা, বরগুনা ও পটুয়াখালী সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় জেলেদের নৌকায় ডাকাতি, লুটপাট ও অপহরণের অভিযোগ রয়েছে ধৃত এসব জলদস্যুদের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানিয়েছে, গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পাথরঘাটা, বরগুনা ও পটুয়াখালীর কিছু জেলে মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে গিয়েছিলেন। এরপর গত ২০ নভেম্বর র্যাব জানতে পারে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে অপহরণ করে জিম্মি করা হয়েছে। সীমান্তে এক জন জেলেকে গুলি করে হত্যার খবরও প্রচার পায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, উপকূল নিরাপদ রাখতে আমাদের বরিশালের র্যাব-৮ কাজ করে যাচ্ছে। ২০ নভেম্বরের ঘটনা জানার পর র্যাব ব্যাপকভাবে অভিযান চালায়। ঢাকা থেকে স্পেশাল ফোর্স গিয়ে কাজ করেছে। জিম্মিদের উদ্ধার করতে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার এনে টহল জোরদার করা হয়েছে। এই টহলের খবর পেয়ে গত ২ নভেম্বর জিম্মিদের একটি নৌকায় উঠিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। এসব জিম্মিদের কারও কারও পরিবারের কাছ থেকে তারা টাকা নিয়েছে, আবার অনেকের কাছ থেকে নিতে পারেনি।
র্যাবের গনমাধ্যম শাখার প্রধান জানান, পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতরা নিজেদের অপহরণের শিকার হিসেবে প্রচার করে। অন্যদিকে জেলেদের ডাকাত হিসেবে পরিচয় দেয় স্থানীয়দের কাছে। স্থানীয়রা ভুল তথ্য পেয়ে ওই জেলেদেরই মারধর করে। প্রাথমিকভাবে র্যাবেরও মনে হয়েছিল, এটি ডাকাতদের নৌকা। পরে তাদের কথা শুনে আমরা প্রকৃত তথ্য বুঝতে পারি। এরপর অপহরণের শিকার সাত জেলে পাথরঘাটা থানায় দু’টি মামলা দায়ের করলে র্যাব ব্যাপক গোয়েন্দা কার্যক্রম চালায়।
র্যাব সূএে জানা যায়, অপহরণের পর মুক্তিপণের যে টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। এসব ব্যাংকিং কার্যক্রমের মূল হোতা ইলিয়াসকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, আমরা জানতে পারি, প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। এরপর আরও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পটুয়াখালীর গলাচিপার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে অপহরণের সঙ্গে সরসরি জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় একটি এক নলা বন্দুক, ওয়ান শ্যুটার গান, দেশীয় অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ডাকাতিতে ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করা হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার জলদস্যুরা জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। তারা গত তিন-চার বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল।
এ বিষয়ে র্যাবের ঝটিকা অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।