শান্তা ইসলাম,উত্তরাঃ
রাজধানীর উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পাকুরিয়া ৫২ নং ওয়ার্ডে অবৈধ গ্যাস সংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে দেখা যায় কাউন্সিলর হাজী মোঃ ফরিদ আহমেদের কথিত ভাগ্নি হাসি বেগম হুশির পাকুরিয়া তারা মসজিদ সংলগ্ন চারতলা ভবন সহ ভবনের পিছনে থাকা টিনশেড বাড়িটির গ্যাস সংযোগ অবৈধ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় হাসি বেগম হুশির টিনশেড বাড়িতে সড়কের উপর দিয়ে গ্যাস লাইন দিয়ে ১০ টি রুমে আনুমানিক ৩০ জন মানুষের জন্য দেয়া হয়েছে ৪ টি চুলা।
ভাড়াটিয়াদের কাছে জানতে চাইলে বলেন আমরা শুধু রুম ভাড়া দেই। বাকি বিদ্যুৎ বিল গ্যাস বিল সহ সকল বিল বাড়িওয়ালাই দিয়ে থাকে। তবে পাশে থাকা আরো দুইটি বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে গ্যাস সংযোগ না পেয়ে সিলিন্ডার গ্যাস এর মাধ্যমে পুরোটা বাড়ির ভাড়াটিয়াদের রান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গ্যাস লাইন অবৈধ কিনা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসি বেগম হুশির টিনশেড বাড়ির এক ভাড়াটিয়া বলেন লাইনগুলো অবৈধ তবে তাতে কি। অদৃশ্য শক্তিসহ টাকার কাছে হার মানতে হয় সবাইকে।যেমন গত ১৫/০৪/২০২১ রোজ শুক্রবার রাতে কয়েকজন সংবাদিক পরিচয় দিয়ে অবৈধ গ্যাস লাইনের বিষয় জানতে চাইলে বাড়ির মালিক হাসি বেগম হুশি সহ তার স্বামী গ্যাস লাইনের সঠিক কাগজপত্র দিতে না পেয়ে অবশেষে এক লক্ষ টাকা দিয়ে কতিপয় সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করে দেয়।
অনুসন্ধান শেষে বাড়িটির মালিক হাসি বেগম হুশি সহ তার স্বামীর কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের উপর রাগান্বিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল সহ মারধরের হুমকি দিয়ে একজন নারী সংবাদ কর্মীর হাতে থাকা মোবাইল ফোন জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে কথিত ভাগ্নির কাউন্সিলর মামাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করেন। কাউন্সিলর মামা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাইলে ফোনের মাধ্যমে কাউন্সিলর হাজী মোঃ ফরিদ আহমেদ সাংবাদিকদের তার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
অতঃপর সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কাউন্সিলর হাজী মোঃ ফরিদ আহমেদের কার্যালয়ে গিয়ে বসার একপর্যায়ে হাসি বেগম হুশি ও তার স্বামী সহ ৮ থেকে ১০ জন যুবক কাউন্সিলর অফিসে এসে উঠে।কাউন্সিলরের সামনেই ভাগ্নি হাসি বেগম হুশি সাংবাদিকদের আবারও অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ভাগ্নির কন্ঠশর। গালাগালির একপর্যায়ে বলে উঠে ’ জানোনা মামা গত শুক্রবার রাতে কয়েকজন সাংবাদিককে এক লক্ষ্য টাকা দিয়েছি।”
টাকা কেন দিয়েছেন প্রশ্নের সাথে সাথে কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ ভাগ্নিকে ধমক দিয়ে নিজের কার্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন।
এ সকল কারণে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় এবং রাজস্ব ফাঁকির একটি অন্যতম কারণ অবৈধ সংযোগ। এর কারণে একদিক যেমন গ্যাসের সমবণ্টন হয় না,গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হয় এবং অন্যদিকে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়। বিধিমালায় তাই সাধারণ সংযোগ, মিটার এবং সিএনজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবৈধ সংযোগের জরিমানার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এই নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে গ্যাস বিপণন বিধিমালা, ২০১৯ এর মধ্যে ।
”এবিষয়ে কাউন্সিলর মোঃ ফরিদ আহমেদ বলেন সাংবাদিকদের কি বৈধ বা অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেখার অনুমতি আছে কিনা?”
কিছুক্ষণ পর বলে উঠে “এ যেমন গত কিছু দিন আগে তিতাসের লোকজন আসতে চাইলে করোনার কারণে তাদেরকে বারণ করে দিয়েছি তবে আমার এলাকায় যে কোন সংক্রান্ত বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সাংবাদিকরা আসতে হলে আমার অফিসে এসে অনুমতি নিয়ে পরে কাজ করতে হয়, কথার একপর্যায়ে ভাগ্নির বিষয়ে বলে উঠে আপনারাতো সাংবাদিক মানুষ ভাগ্নির আচরণ থেকে অনেক কিছু বুঝতে পেরেছেন। অশিক্ষিত মানুষ তো তাই আপনাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। ঠিক আছে আপনারা রিপোর্ট করতে হবে না বাড়ির লাইনগুলো অবৈধ। তিতাস আফিসে যোগাযোগ করে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিন।” এই বলে নিজের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পড়েন কাউন্সিলর হাজী মোঃ ফরিদ আহমেদ।