মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে মসজিদের এক ইমাম অলৌকিক ভাবে পেয়েছেন প্রায় পৌনে ৬লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই টাকা তিনি নিজে খরছ না করে জমা দিয়ে দিয়েছেন ব্যাংকে।
আর এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে উদার মনের সেই ইমামকে নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। সৌ-ভাগ্যবান সেই ইমামের নাম- মাওলানা হোসাইন আহমেদ। তিনি জেলার শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের শষারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
বর্তমানে তিনি দিরাই উপজেলার শ্যামারচর বাজার জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে
কর্মরত রয়েছে। এব্যাপারে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরীতে অবস্থিত কৃষি ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে মাওলানা হোসাইন আহমেদের নামে একটি ব্যক্তিগত একাউন্ট রয়েছে। যার সঞ্চয়ী হিসাব নাম্বার হল-২৮৩৮। আর সেই একাউন্টে মাত্র ১০হাজার টাকা জমা রেখে ছিলেন ওই ইমাম। কিন্তু গত রবিবার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখা যায় তার একাউন্টে ৫লক্ষ ৯১হাজার ২৬৮টাকা রয়েছে।
এত টাকা দেখে ইমাম হোসাইন আহমেদ অবাক হয়ে যান। তারপর সংশ্লিষ্ট কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজারকে এই বিষয়টি জানান। এবং নিজের ১০হাজার টাকা একাউন্টে রেখে অলৌকিক ভাবে পাওয়া ৫লক্ষ ৮১হাজার ২৬৮টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকে ফেরত দেন। এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জে ইমাম হোসাইন আহমেদকে নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। আর সবার মাঝে একটাই প্রশ্ন উঠেছে- এই টাকার প্রকৃত মালিক তাহলে কে ?
আজ বুধবার (২০শে জানুয়ারী) সকাল ১১টায় দিরাই উপজেলার শ্যামারচর বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হোসাইন আহমেদ এই প্রতিবেদকে বলেন- টাকাগুলো মনে হয় ভুল বসত আমার একাউন্টে চলে এসেছে। এগুলোতো অন্যের
টাকা,আমার উপার্জিত টাকা নয়। এই টাকায় আমার কোন হক নেই। তাই টাকাগুলো আমি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে দিয়েছি। তারা যেন এই টাকার প্রকৃত মালিককে খোঁজে বের করে টাকাগুলো ফেরত দিয়ে দেয়।
সংশ্লিষ্ট কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা তাপস মঞ্জুসা দেব সাংবাদিকদেরকে বলেন- ব্যাংকে ডিজিটাল একাউন্ট করার সময় হয়তো সংখ্যায় ভুল করে এই টাকাগুলো মাওলানা হোসাইন আহমেদের একাউন্টে চলে এসেছে। আমরা অনেক খুজাখুজি
করে সঠিক মালিক না পাওয়ার কারণে ওই টাকাগুলো নিয়মানুযায়ী ব্যাংকের অতিরিক্ত হিসাবে জমা রাখা হয়েছে। তবে লোভকে ত্যাগ করে এতগুলো টাকা ফেরত দিয়ে মাওলানা হোসাইন আহমেদ উদারতার প্রমান দিয়েছেন।