,


শিরোনাম:
«» তুরাগে গৃহবধু হত্যার অভিযোগে স্বামীর বন্ধু গ্রেফতার «» ভাড়া বাসায় অবস্থান করে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতী করতো তারা’ «» ঈশ্বরদীতে ২০০ লিটার মদসহ গ্রেফতার ১ «» ঈশ্বরদীতে নবজাতক হত্যার অভিযোগ সাবেক স্বাস্থ্যকর্মীর আকলিমার বিরুদ্ধে «» সাংবাদিকতার দায় একমাত্র জনসাধারণের কাছে:তিতুমীর «» ঈশ্বরদীতে প্রণোদনার সার-বীজ প্রদানে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রকৃত কৃষকদের «» ঈশ্বরদীতে বালু খেকোদের কবলে বিলিন হাজার হেক্টর ফসলি জমি, দিশেহারা কৃষক «» ঠাকুরগাঁওয়ে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালিত র‍্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত «» চাঁপাইনবাবগঞ্জ সাবেক এমপি ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনে হামলা «» চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষকলীগের অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে যুবলীগ নেতা মিনহাজ আহত

চিকুনগুনিয়া ও এনসেফেলাইটিস ঝুঁকিতে রাজশাহী

রাজশাহী বিভাগীয় চীফ এম এ সৈয়দ তন্ময় :
এমনিতেই ছোঁয়াচে রোগের জাঁকিয়ে বসার আদর্শ সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। এর উপর দু’মাস থেকে ফগার মেশিনের ওষুধের অভাবে বন্ধ আছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মশক নিধন কার্যক্রম।
গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেছিল রাসিক। কিন্তু মাত্র ২১ দিন মাথাই বন্ধ হয়ে যায় মশা মারার সেই অভিযান! এখনও তা বন্ধ হয়েই আছে। তবে আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে নগরীতে আবারও মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হবে। ডিসেম্বর পর্যন্ত তা চলবে বলে জানিয়েছে রাসিকের পরিচ্ছন্নতা শাখা।
বর্তমানে মশার বংশবিস্তার রোধে রাসিকের লিংবেট বা মশার লার্ভা নিধন কর্মসূচি চলছে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো মশা মরে না, শুধু মশার ডিম নষ্ট হয়। রাসিকের সূত্র হচ্ছে, ডিম নষ্ট হলে এমনিতেই মশা আর বংশবিস্তার করতে পারবে না। ফলে মশার উৎপাত সাধারণ নিয়মেই এক সময় কমে আসবে।
এ অবস্থায় মশার জীবাণুবাহী রোগ চিকুনগুনিয়া ও জাপানি এনসেফেলাইটিস রোগের ঝুঁকিতে পড়েছেন নগরবাসী। রাজধানী ঢাকায় চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বাড়ায় দিনের আলোয় মশা কামড়ালেই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকে। আর দিনের বেলায় মশার উৎপাত কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর তা বেড়ে যাচ্ছে। মশার কামড়ে তাই অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখাও। রাতে তো বটেই দিনের আলোতেও কয়েল জ্বালিয়ে পড়ার টেবিলে বসছে কচিকাঁচা শিক্ষার্থীরা।
নিউ কলোনি এলাকার সরকারি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, অস্বাভাবিকভাবে মশার উৎপাত বেড়েছে। তাই এখন চিকুনগুনিয়া ও এনসেফেলাইটিস রোগের আতঙ্কে ভুগছেন তারাও। একটু জ্বর, সর্দি, কাশি বা শরীরে ব্যথা হলেই তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটছেন।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর বেশিরভাগ ড্রেনগুলো এখন নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে না। যেখানে সেখানে পড়ে থাকছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। এতে একটু বৃষ্টি হলেই ড্রেনের পচা দুর্গন্ধময় পানি রাস্তায় উপচে পড়ছে। আর বৃষ্টির পর পানি জমে থাকছে বেশ কয়েক দিন। ফলে মশা সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যেই ডিম পাড়ছে। অথচ কেবল নির্দিষ্ট কিছু ড্রেন ছাড়া অন্য কোথাও মশার ডিম নষ্টের ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে না। এই বর্ষায় নগরীজুড়ে তাই বেড়েছে মশার দাপট।
চিকিৎসকরা বলছেন, কেবল চিকুনগুনিয়াই নয়, মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রাজশাহীতে জাপানি এনকেফেলাইটিস রোগের ঝুঁকিও কয়েকগুণ বেড়েছে। সাধারণত চিকুনগুনিয়া হয় এডিস মশা থেকে। আর এনসেফেলাইটিস হয় কিউলেক্স মশা থেকে। রাজশাহীতে বর্তমানে এই দু’টি মশাই রয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি মেডিকেল কর্মকর্ত (ইএমও) ডা. মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, গত বছর রাজশাহীতে এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫৪ জন। এ বছর তার এমন সংখ্যা না দাঁড়ালেও গত সপ্তাহ থেকে প্রচণ্ড জ্বরসহ অন্যান্য লক্ষণ নিয়ে মানুষজন হাসপাতালে আসছেন। এখন পর্যন্ত চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত ৮-১০ জন রোগী পাওয়া গেছে। তবে তারা এখানে আক্রান্ত হয়নি। কোনো না কোনোভাবে ঢাকায় গিয়ে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।
রাজশাহীতে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন এমন কোনো রোগী এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ঝুঁকি রয়েছে। এই পানি কোথাও জমে থাকলেই এডিস মশা ডিম পাড়বেই।
আর এডিশ মশা যেহেতু চিকুনগুনিয়ার বাহক সেহেতু এই রোগের প্রকোপ রাজশাহীতেও দেখা দিতে পারে। তবে জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত রোগী এখন মাঝে মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের যথাযথ চিকিৎসসাও দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ডা. আজিজুল ইসলাম।
এদিকে, রাসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের মশক নিধন পরিদর্শক মো. সানাউল্লাহ বলেন, মশা বাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া ও এনসেফেলাইটিসের ব্যাপারে সতর্ক করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি রাসিকে এসেছে। সচেতনতামূলক কিছু লিফলেটও পাওয়া গেছে। সেগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ওষুধ না থাকার কারণে মশক নিধন কার্যক্রম দু’মাস ধরে বন্ধ আছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, ওষুধ নেই ঠিক আছে। কিন্তু সেজন্য মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ আছে এই কথা পুরোপুরি ঠিক নয়। ওষুধ থাকলেও এই বর্ষাকালে তারা মশক নিধনের জন্য ফগার মেশিনগুলো ব্যবহার করতেন না।
এ সময় লিংবেট পদ্ধতিতে মশার বংশবিস্তার রোধ করা হয়। বর্তামানে সেই কাজটি নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডেই চলমান রয়েছে। এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আবারও পুরোদমে মশক নিধন কার্যক্রম চলবে বলে জানান সিটি করপোরেশনের এই প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। পাঠকের মতামতের জন্য কৃর্তপক্ষ দায়ী নয়। লেখাটির দায় সম্পূর্ন লেখকের।
ঘোষনাঃ